ব্লাড সুগার কমানোর ১০টি খাবার

বর্তমান বিশ্বে ডায়াবেটিস একটি ক্রমবর্ধমান মরন ব্যাধি । যার নেই কোন চিরস্থায়ী নির্মুলের চিকিৎসা । একবার হলে এর ঘানি টানতে হয় সারা জীবন । কিন্তু তাই বলে কি আমরা বসে আছি । মোটেও তা না । প্রিতিনিয়ত আমরা এর কবল থেকে বাঁচার উপায় খুজে চলি । ইস যদি এমন কোনো খাবার থাকতো, যেগুলো খেলে ডায়াবেটিস কমে যেতো । আছে কি এমন কোনো খাবার ?

সম্মানিত সুধি, আজকের আর্টিকেলে আমি এমন কিছু খাবার নিয়ে আলাপ করতে চলেছি, যে খাবার গুলো খেলে ডায়াবেটিস কমানো বা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয় । আশা করি লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন আর খাবার গুলো খাবার নিয়ম কানুন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন । তো চলুন শুরু করা যাক ।

যে খাবার গুলো নিয়ে আলোচনা করবো, সেগুলো খেলে সহজেই ডায়াবেটিস কামানো যায় । আপনিও এই খাবার গুলো আপনার ডায়াবেটিস কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়ম মেনে খেতে পারেন ।

১ । সবার প্রথমে যে খাবারটির কথা বলবো, সেটি হচ্ছে আমেরিকান জিনসেং । এটি একটি ভেষজ উদ্ভিদ, যেটি সুদূর প্রাচীন কাল থেকেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ঘরোয়া ভাবে ব্যবহার হয়ে আসছে । আধুনিক গবেষণাতেও প্রতীয়মান জিনসেং ডায়াবেটিস কমাতে ওষুধের মতোই ভুমিকা রাখছে । ব্লাড সুগার কমানোর উপায় হিসাবে খাবার গ্রহণের এক থেকে দেড় ঘন্টা পূর্বে ১ গ্রাম জিনসেং খেতে পারেন । এতে আপনার ব্লাড গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকবে ।

২ । দুই নাম্বারে বলবো মেথি বীজ খাওয়ার কথা । প্রাচীন কাল থেকেই ব্লাড সুগার কমাতে মেথি বীজ ব্যবহার হয়ে আসছে । অনেক আধুনিক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, নিয়মিত মেথি বীজ বা মেথি বীজ ভেজানো পানি খেলে ডায়াবেটিস হ্রাস পায় অভার অল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহজ হয় ।

৩ । গবেষণায় প্রাপ্ত ফলে জানা যায়, যারা খাবার গ্রহণের পর বা খাবারের সাথে দই খান, তাদের খাবারের পর ব্লাড গ্লুকোজ কম বৃদ্ধি পায় । তবে এই দই হতে হবে টক দই, সেই সাথে এটাও নিশ্চত করতে হবে, যেন এতে প্রোবায়োটিকের কোয়ান্টিটি এবং গুনাগুণ ঠিক ঠাক থাকে । প্রোবায়োটিকের কুয়ান্টিটি এবং গুনাগুণ ঠিকঠাক থাকলে আপনি নিশ্চিন্তে খেতে পারেন ।

৪ । জানা যায় তুর্কি দেশে ব্লাড সুগার কমাতে ঢেঁড়স বীজ কাজে লাগানো হয় । আপনিও ব্লাড সুগার কমাতে ঢেঁড়স নিয়মিত খাবার তালিকায় রাখতে পারেন । এতে ঢেঁড়সে থাকা এন্টি ডায়াবেটিস উপদান গুলো আপনার প্রাথমিক ব্লাড সুগার কমানোর সাথে সাথে আপনার দীর্ঘ মেয়েদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে ।

৫ । ডায়াবেটিস বা ব্লাড সুগার কমাতে চিকিৎসকেরা আমন্ড খেতে বলেন । কিন্তু চড়া মূল্যের কারণে আপনি হয়তো সেটা আমলে নিতে চান না । আমন্ড সত্যিকার অর্থেই ব্লাড গ্লুকোজ কমাতে দারুন কার্যকরী । ডায়াবেটিস কমাতে আপনি তিন থেকে চারটি আমন্ড প্রতিদিন খেতে পারেন । নিয়মিত আমন্ড খেলেই আপনি এক মাসের মধ্যে ব্লাড গ্লুকোজ লেভেলের মাত্রা টের পাবেন ।

৬ । ভাত রুটি এবং সবজির সাথে আপনি পাতি লেবু মিশিয়ে খান, এতে আপনার খাবার গুলোর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমে যাবে । খাবার গুলোর যতটা ব্লাড সুগার বাড়ানোর কথাব্লাড সুগার বাড়ানোর কথা, পাতি লেবু মেশালে খাবার গুলো তার থেকে কম ব্লাড গ্লুকোজ বাড়াবে । আর তাতে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহজ হবে ।

৭ । যারা ভাত আলুর মতো স্টার্চ যুক্ত খাবার খেতে ভালোবাসেন আবার ব্লাড গ্লুকোজ বাড়বে এই নিয়ে টেনশন করেন । তাদের জন্য জামের বীজ দারুন কার্যকরী এন্টি ডায়াবেটিস অস্ত্র হতে পারে । জামের বীজের আলফা অ্যামাইলেজ ইনহিবিটর ভাত রুটি ভুট্টা আলুর স্টার্চকে গ্লুকোজে ভাঙ্গতে বাধা দেয় । ফলে এই খাবার গুলো খেলেও আপনার ব্লাড সুগার বাড়ে না । ফলে সুগার থাকে নিয়ন্ত্রণে ।

৮ । তিশি বীজ বা ফ্লাক্স সিড ডায়াবেটিস কমানোর উপায় হিসাবে দারুন কার্যকরী । এই তিসি বীজে আছে লিগন্যান, ফাইবার এবং প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড । যেটা আপনার ইনসুলিন সেনসিভিটি বাড়িয়ে দেয় । ফলে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ব্লাড গ্লুকোজ যেমন কমিয়ে আনতে সাহায্য করে, তেমনি যাদের ডায়াবেটিস নাই তাদেরও ডায়াবেটিস কাছে আসতে দেয় না ।

৯ । যদি আপনি খুব দ্রুতই ব্লাড গ্লুকোজ কমিয়ে নিয়ে আসতে চান, তাহলে আপনি রান্না ঘরের অতি পরিচিত মসলা দারুচিনি খেতে পারেন । গবেষণা থেকে জানা যায়, দারুচিনি খাওয়ার সাথে সাথেই ব্লাড গ্লুকোজ খুব দ্রুতই কমতে থাকে এবং এটির কার্যকারিতা প্রায় ১২ ঘন্টা পর্যন্ত থাকে । এর অর্থ দাড়ায় দারুচিনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনাকে সারা দিনে দু বার খতে হবে ।

১০ । ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার আপনার ডায়াবেটিস অত্যন্ত চমৎকার ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে । একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যারা ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খায়, তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা ৩৩ শতাংশ থেকে ৩৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায় । কুমড়া বীজ ম্যাগনেসিয়ামের সবথেকে বড় উৎস । তাই প্রিতিদিন কয়েকটা করে কুমড়া বীজ খেতে পারেন , এতে আপনি প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম পেয়ে যাবেন । ফলে আপনার ডায়াবেটিস কমে আসবে এবং ডায়াবেটিস থাকবে নিয়ন্ত্রণে । আর যাদের ডায়াবেটিস নেই, তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনাও কমিয়ে নিয়ে আসবে ।

সম্মানিত সুধি, এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ । আশা করছি লেখাটা আপনাদের ভালো লেগেছে যদি ভালো লেগে থাকে, তাহলে একটা লাইক দিবেন । আর বন্ধু বান্ধব আত্মীয়-স্বজনদেরে সাথে শেয়ার করে পড়ার সুযোগ করে দিবেন । আল্লাহ সকল অবস্থায় আমাদের সহায় হোক-আমিন ।








No comments

Powered by Blogger.