লো প্রেসারে কি খাবেন
লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেসার এটি খুবই কমন একটি শব্দ । এটির সাথে আমরা সুপরিচিত । এর অন্য আর একটি নাম হাইপোটেনশন । হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের মতো এটিও আমাদের জন্য ক্ষতিকর । সম্মানিত সুধি আসুন আগে আমরা জেনে নেই । একজন সুস্থ মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ কতো থাকে? আর রক্তচাপ কতো হলে আমরা ডাক্তারি মতে সেটিকে লো প্রেসার বলতে পারি । একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ যদি ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি থাকে । তাহলে এই রক্তচাপকে চিকিৎসা স্বাস্ত্রমতে স্বাভাবিক রক্তচাপ বলা হয়ে থাকে । আর রক্তচাপ যদি ৯০/৬০ মিলিমিটার মার্কারি এর কম থাকে তাহলে এই রক্তচাপকে লো প্রেসার বলা হয়ে থাকে ।
আসুন এখন জেনে নেই প্রেসার লো হলে আমাদের শরীরে কি ঘটে? বা প্রেসার লো হলে আমাদের কি হয়? কেমন করেই বা আমরা জানবো বা বুঝবো যে আমাদের প্রেসার লো হয়েছে । আমাদের প্রেসার যদি খুব কমে যায় । তাহলে আমাদের মস্তিষ্ক, কিডনি এবং হার্টে রক্ত ঠিকঠাক প্রবাহিত হতে পারে না । ফলে আমারা অসুস্থ হয়ে পড়ি । যদি প্রেসার লো হয়ে পড়ে । তাহলে প্রাথমিক ভাবে বাড়িতেই কিছু প্রক্রিয়া মেনে চলা জরুরী ।
লো প্রেসার হলে সাধারণতো মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, বুক ধরফর, অবসাদ, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া এমনকি স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস প্রাস্বাস নিতে অসুবিধা বোধ হতে পারে । অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, ভয় কিংবা স্নায়ুবিক দুর্বলতার কারণে লো ব্লাড প্রেসার হতে পারে ।
প্রেসার লো হলে বাড়িতেই কিছু পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ । এই পরিস্থিতে যে খাবার গুলো খেলে আপনার প্রেসার বেড়ে যায়, সেগুলো খেতে হবে । এই ধরনের খাবার গুলোর মধ্যে যেমন লবণ পানি । লবণে থাকে সোডিয়াম যেটা রক্তচাপ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । তবে হ্যাঁ পানিতে লবণ বেশি দেওয়া যাবে না । এ ক্ষেত্রে আপনি এক গ্লাস পানিতে দুই চা চামচ চিনি এবং এক চা চমচ লবণ মিশ্রিত করে খাওয়াতে পারেন ।
তবে যদি প্যাসেন্টের ডায়াবেটিস থাকে সে ক্ষেত্রে চিনি যতটা সম্ভব এড়িয়ে যেতে হবে । অর্থাৎ চিনি ব্যবহার না করাই উত্তম । লবণ পানি ছাড়াও লো প্রেসারের রোগীকে কিসমিস খাওয়াতে পারেন । এই লো প্রেসার জনিত সমস্যার জন্য প্রাচীন সময় থেকেই কিসমিস ব্যবহার হয়ে আসছে । এক থেকে দুই কাপ কিসমিস আপনি সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে, সকালে খালি পেটে এই কিসমিস ভেজানো পানি টুকুন খেতে পারেন । এ ছাড়াও পাঁচটি কাঠ বাদাম এবং পনেরো বিশটি চিনা বাদাম খেয়ে নিতে পারেন । খেতে পারেন আপনি কফিও । স্ট্রং কফি বা যে কোন ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানিয় দ্রুত ব্লাড প্রেসার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । যদি আপনার হটাৎ করে লো প্রেসার দেখা দেয় । তাহলে আপনি এক কাপ কফি খেতে পারেন । যারা নিয়মিত এই লো প্রেসার জনিত সমস্যায় ভুগছেন । তারা সকালে ভারি নাস্তা সেরে নেবার পর এক কাপ স্ট্রং কফি খেতে পারেন ।
তবে যাদের লো প্রেসার চলতেই থাকে । তারা সব সময় স্ট্রং কফি না খাওয়াই ভাল । কেননা এর আরোও অন্য কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে । এই সমস্ত লো প্রেসারের রোগীরা মধু খেতে পারেন । কেননা দীর্ঘদিন থেকে এটি এই লো প্রেসার সহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে । এক কাপ পানি নিয়ে এতে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন । এ ছাড়াও মধু দিয়ে দুধ খেলেও আপনার প্রেসার বাড়বে ।
এ গুলোর বাইরে আপনি বিটের রস খেতে পারেন । এই বিটের রস হাই প্রেসার এবং লো প্রেসার উভয় ক্ষেত্রেই সমান কার্যকরী । যারা লো প্রেসারে ভুগছেন, সে সমস্ত রোগীরা দিনে দুই থেকে তিন বার বিটের রস খেতে পারেন । এভাবে বিটের রস খেলে আপনার লো প্রেসার এক সপ্তাহের মধ্যেই স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসবে । সর্বোশেষে যে খাবারটির কথা বলবো, সেই খাবারটির নাম হচ্ছে পদিনা পাতা । এই পদিনা পাতা নিয়মিত খেলে, এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার প্রেসার বেড়ে যাবে । ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ইত্যাদি খনিজ আছে পদিনা পাতায়, যেটা দ্রুত প্রেসার বাড়ানোর সাথে সাথে মানসিক অবসাদও দূর করে । পদিনা পাতা বেটে নিন । এর পর এর সাথে মধু মিশ্রিত করে খেয়ে নিন ।
এতক্ষণ ধরে যে আলোচনা গুলো করা হলো, সেগুলো ফলো করলে আপনার লো প্রেসার দ্রুতই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে । শৃঙ্খলিত জীবন যাপন করুন আর জীবনেকে এঞ্জয় করুন ।
আশা করি লেখাটা আপনাদের ভালো লেগেছে, যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে একটা লাইক দিবেন । আর বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করতে একদমই ভুলবেন না । আল্লাহ সকল অবস্থায় আমাদের সহায় হোক ।
Post a Comment