সাহ্রিতে যা খেলে সারা দিন চাঙ্গা থাকা যায়
১ । খেতে হবে কার্বোহাইড্রেট–জাতীয় খাবার
সাহ্রির খাবারের তালিকায় আপনাকে অবশ্যই রাখতে হবে জটিল শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট–সমৃদ্ধ খাবার । এর কারণ এই ধরনের খাবার আমাদের হজম হতে সময় লাগে এবং দীর্ঘক্ষণ কর্মশক্তি ধরে রাখতে ভুমিকা রাখে । কার্বোহাইড্রেট–জাতীয় খাবার আমাদের ধীরে ধীরে রক্তে গ্লুকোজ এনে দেয়। এই জাতীয় খাবার হচ্ছে যেমন, ভাত, লাল আটার রুটি, আলু, চিড়া, ওটস, সিরিয়াল, বার্লি ইত্যাদি । এসব খাবারে যথেষ্ট পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায় । এবং হজম হতে প্রায় ৮ ঘণ্টা লেগে যায় । যেহেতু হজম হতে একটু সময় লাগে তাই আমাদের ক্ষুধাও লাগে একটু দেরিতে । ফলে আমাদের সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকা অনেকটা সহজ হয়ে যায়।
২ । খেতে হবে প্রোটিন–জাতীয় খাবার
প্রোটিনের ভালো উৎসের মধ্যে আছে মাছ, মাংস, তরল দুধ, গুঁড়া দুধ, দুধজাত খাবার, ডিম, ডাল ইত্যাদি । সাহ্রিতে এই রকম আমিষ বা প্রোটিন–জাতীয় খাবার যদি আপনি খান, তাহলে এগুলো আপনার দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সারা দিন আপনাকে সতেজ এবং সবল রাখবে ।
সাহ্রিতে আপনি দুধ খেতে পারেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এ ছাড়া দুধজাতীয় বিভিন্ন খাবার—দই, ছানা, কিংবা কলা ও আমসহ দুধভাত এগুলোও আপনি খেতে পারেন । কারণ এগুলো শরীরে ভালো পুষ্টি জোগায়। আপনি দইয়ের সঙ্গে চিড়াও খেতে পারেন।
মাছ বা মাংসের যোগান থাকলে ভালো হয়, যদি না থাকে তাহলে এর বদলে সাহ্রির খাবারে একটি ডিম থাকলেও তা আপনাকে প্রয়োজনীয় শক্তির চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করতে পারে। চর্বিযুক্ত মাংস পরিহার করে আপনি মুরগীর মাংস খাওয়া চালাতে পারেন ।
৩ । শাকসবজি খেতে পারেনঃ
আমাদের দেহে ভিটামিনের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস হচ্ছে শাকসবজি । তাই সাহ্রিতে প্রতিদিন আপনার শাক সবজি খাওয়া উচিত। তবে রাতে অতিরিক্ত আঁশযুক্ত শাকসবজি না খাওয়াই ভাল । কেননা এতে আপনার হজমের সমস্যা হতে পারে। আপনি বরং মাঝারি আঁশের শাক সবজি খেতে পারেন । , এই জাতীয় শাক সবজির মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত যেমন ঝিঙা, চিচিঙ্গা, লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, গাজর ইত্যাদি ।
৪ । খেতে পারেন খেজুর
আপনি যদি সাহ্রিতে খেজুর খান, তাহলে দিনভর কর্মক্ষম থাকার শক্তি পেতে পারেন । এ সময় অন্তত দুয়েকটি খেজুর আপনি খেতে পারেন । এতে আপনি যে জনিষটা পাবেন, তা হচ্ছে প্রাকৃতিক ফ্রুকটোজ ও প্রচুর ফাইবার বা আঁশ। আর এতে আপনার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক থাকবে ।
৫ । আপনাকে পর্যাপ্ত পানি খেতে হবেঃ
আপনাকে ইফতার থেকে শুরু করে সাহ্রি পর্যন্ত চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে । তবে অনেকে একসাথে অনেক পানি খেয়ে থাকেন, যা পরবর্তী সময়ে পেটে অস্বস্তির সৃষ্টি করে । এটা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয় । আপনি বরং কিছুক্ষণ পর পর পরিমাণ মতো পানি পান করতে পারেন ।
আসুন এখন চোখ বুলাই
সাহ্রিতে কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলবেনঃ
বেশি তৈলাক্ত, মসলাদার ও ঝাল খাবার এগুলো খেতে যাবেন না । সাহ্রির খাদ্যতালিকা থেকে আপনি বিরিয়ানি, পোলাও, তেহারি ইত্যাদি ভারী খাবার পুরোপুরি বাদ দিন । কারণ এই জাতীয় খাবার খেলে আপনার বদহজম, বুক জ্বালাপোড়া এবং পেটফাঁপার মতো সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
আপনাকে আরো একটি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে । তা হচ্ছে লবণযুক্ত খাবার । কারণ এই জাতীয় খাবার আপনার পানির তৃষ্ণা বাড়িয়ে দেয় এবং যেহেতু, সারা দিন আপনার পানি খাওয়া যাবে না, তাই লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাই হবে আপনার জন্য উত্তম ।
আমাদের ভেতর অনেকেই আছেন যারা সাহ্রিতে কোল্ড ড্রিঙ্কস বা কোমল পানীয় খেতে ভালোবাসেন । কিন্তু এসব পানীয়তে ক্যাফেইন থাকে, যা আপনার প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় । তাই সাহ্রিতে ক্যাফেইন আছে, এমন পানীয় খেতে যাবেন না । এগুলোর ভেতর আছে যেমন চা, কফি ইত্যাদি । কারণ, ক্যাফেইন ঘন ঘন প্রস্রাবের মাধ্যমে আপনার শরীরকে পানিশূন্যের দিকে কিয়ে যাবে । সুতরাং এই জাতীয় খাবারকে না বলুন ।
যদি আজকের আলাপ আপনাদের মনে ধরে তাহলে আজ থেকেই ফলো করতে পারেন । তো আজ এ পর্যন্তই । কথা হবে পরের কোন এপিসোডে । আল্লাহ হাফেজ ।
Post a Comment