রমজান মাসে পানিশূন্যতা এড়াতে যা করবেন

রমজান মাস স্বাভাবতই আমাদের সারাদিন অভুক্ত বা না খেয়েই থাকতে হয় । তাই এই রমজানে বা রোযায় আমাদের দেহে পানি শূন্যতা দেখা তিতে পারে । অবশ্য বর্তমানে যে আওবাহাওয়া তাতে এই পরিস্থিতে আমাদের দেহে পানি শুন্যতা হবার সম্ভাবনা কম বললেই চলে । তবে সামনে আসছে তাপমাত্রা বেড়ে যাবার দিন, তুখোর রোদের দিন । তখন হয়তো রোযাদারদের দেহে পানি শুন্যতার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে । তবে যারা কায়িক পরিশ্রম করেন তারা অনায়াসেই পানি শুন্যতায় পড়তে পারেন । তো এই রোযার কারণে পানি শুন্যতা এড়াতে আপনাকে তরল খাবার সেই সাথে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে ।

এ জন্য আপনাকে যা করতে হবে, তা হচ্ছে ইফতার থেকে সাহ্‌রি পর্যন্ত সময়ে আপনাকে এমনভাবে পানি এবং তরল খাবার খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে, যাতে ২৪ ঘণ্টায় আপনার দেহে পানির চাহিদা মিটে যায় । তবে এই পানি আপনি একবারে না খেয়ে, আপনাকে পানি খেতে হবে ধাপে ধাপে । এ ছাড়াও পানি ও তরল খাবারের পাশাপাশি আপনি ফলমূলও খেতে পারেন,  এমন ফল যাতে পর্যাপ্ত পানি থাকে। 

তো রমজান মাসে এই পানিশূন্যতা এড়াতে আমাদের কী কী করা প্রয়োজন, সেটা নিয়েই আমাদেরর আজকের আলাপ । চলুন শুরু করা যাকঃ

১ । পানি ও পানীয় জাতীয় খাবার খেতে হবেঃ

স্বাভাবিক পানি তো খাবেনই । নানা রকম ড্রিংকসও খেতে পারেন। আপনি যদি লেবুপানি, ডাবের পানি, চিড়ার পানি, শরবত, দুধ, স্মুদি, মিল্কশেক—এসব খেতে পারেন তাহলে আপনার পানির চাহিদা মিটে যাবে । আপনি চিয়া সিড বা তোকমা দানা দিয়ে ভেজানো পানি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন । তবে একবারেই অনেক বেশি পানি কিংবা পানীয় খাওয়াই উত্তম । ভরাপেট পানি খেলে অস্বস্তি হতে পারে। তাই রয়েসয়ে খেতে হবে । রাতের বিভিন্ন সময়ে পানি কিংবা পানীয় আপনাকে খেতে হবে । একটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন, খাবার গ্রহণের ১৫-২০ মিনিট পরে আপনি পানি বা পানীয় খাবেন ।

২ । অন্যান্য যে খাবার খেতে হবেঃ

ইফতারের সময় আপনি ফলের সালাদ খেতে পারেন । রাতের বেলা সম্ভব হলে দু–একটি আস্ত ফলও খেতে পারেন। ফলের ভেতর আপেল, নাশপাতি, পেঁপে, আনারস, মালটা, কলা প্রভৃতি এই জাতীয় ফল খাবেন । খেতে পারেন শসা ও টমেটো । ভাতের সঙ্গে রাখুন যেকোনো তরকারির ঝোল । লাউ, কাঁচা পেঁপে বা চালকুমড়ার তরকারি খাওয়া উত্তম । এ ছাড়াও তরল খাবার হিসেবে আপনি ডাল খেতে পারেন রাতের খাবার ও সাহ্‌রির খাবারের সময় ।


৩ । যেসব পানীয় এড়িয়ে চলবেন

যে কোন পানি বা পানীয়মাত্রই যে আপনার দেহে পানির ভারসাম্যে ঠিক  রাখবে, ব্যাপারটা কিন্তু তা নয় । যেমন আপনি ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়ের কথাই ধরুন । এসব পানীয় খেলে আপনার প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ে যাবে । অর্থাৎ আপনার দেহ থেকে পানি বেরিয়ে যাবে । ফলে চা, কফি, কোমলপানীয় ও চকলেটমিশ্রিত পানীয় এড়িয়ে চলাই আপনার জন্য ভালো । তবে যারা আবার চা-কফির প্রতি নির্ভরশীল । তারা চা-কফি একেবারেই বাদ না দিয়ে হালকা একটু আধটু ইফতারের সময় খেতে পারেন ।  তাহলে আপনি রাতে পানির ঘাটতি পূরণ করার সময়ও পাবেন, আবার রাতের ঘুমেরও তেমন ব্যাঘাতও ঘটবে না। তবে সাহ্‌রিতে চা, কফি, কোমলপানীয় বা চকলেটমিশ্রিত পানীয় এগুলো খেতে যাবেন না । এ সময় যদি আপনি ক্যাফেইন গ্রহণ করেন, তাহলে দিনে পানিশূন্যতার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে 


তবে কোন অবস্থাতেই ইফতার থেকে সেহেরি যে কোন সময়ই হোক বেশি পরিমাণ চিনি মেশানো পানীয় না খাওয়াই ভালো । কারণ এগুলো আপনার প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে । ফলে বেড়ে যেতে পারে পানিশূন্যতার ঝুঁকি। তাই কোমলপানীয় ও প্যাকেটজাত জুসকে না বলুন । এ ছাড়াও চিনিমেশানো যেকোনো পানীয় আপনার ওজনও বাড়িয়ে দিতে পারে ।

এখন ঘটনা হলো

পর্যাপ্ত পানি আপনি খাচ্ছেন কিনা, কিভাবে বুঝবেন?

পর্যাপ্ত পানি আপনি খাচ্ছেন? নাকি খাচ্ছেন না, এটা বোঝার জন্য প্রস্রাবের সময় প্রস্রাবের রং খেয়াল করুন । যদি আপনার প্রস্রাবের রঙ হালকা হলুদ বা হালকা খড়ের মতো হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার প্রস্রাব স্বাভাবিক। আর যদি আপনার প্রস্রাব গাঢ় রঙের হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনার পানিশূন্যতা  আছে । এ ছাড়াও পানিশূন্যতা হলে আপনার প্রস্রাবের পরিমাণও কমে যেতে পারে । মুখ ও ত্বক শুষ্ক হতে পারে, চোখ বসে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতি দেখা দিলে বুঝতে হবে এখন থেকে ইফতারের সময় থেকে আপনাকে পানি একটু বেশি খাওয়া লাগবে ।

আপনাদের কি কখনও এমন হয়েছে ? হলে কমেন্টে জানাবেন কিন্তু । তো আজ এ পর্যন্তই । কথা হবে পরের কোন এপিসোডে । আল্লাহ হাফেজ ।

No comments

Powered by Blogger.