রোজায় ইফতারে কী কী খাবেন

সারা বিশ্বের মুসলামানের কাছে রমজান মাস একটি তাৎপর্যপূর্ণ মাস । এই মাসেই পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছিলো । রমজান মাসে আমাদের খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন সেই সাথে পরিবর্তন হয় আমাদের খাবার সময়ও । দিনভর সিয়াম পালন করে আমরা মাগরিবের সময় ইফতার দিয়ে রোযা শেষ করি । তাই ইফতার আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ । সাধারণত আমরা বাংগালীরা সরবত, ছোলা, বেগুনি ,পিয়াজু, মুরি,বুন্দিয়া,কলা খেজুর ইত্যাদি দিয়ে ইফতার করে থাকি । কিন্তু এগুলো কতটা স্বাস্থ্যকর কিংবা কোন কোন খাবার দিয়ে আমাদের ইফতার করা উচিৎ, কোন খাবার গুলো আমাদের জন্য স্বাস্থ্যকর সেটা নিয়েই আমার আজকের আলাপ । তো চলুন জেনে নেয়া যাক কোন কোন খাবার দিয়ে আমরা ইফতার করবোঃ 

১ । পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর পানীয় খেতে হবেঃ 

যেহেতু রোযায় আমাদের সারাদিন না খেয়ে থাকতে হয় তাই আমাদের দেহে পানি শুন্যতা দেখা দিতে পারে । তাই ইফতারে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে । এজন্যে আপনি খেজুর ভেজানো পানি খেতে পারেন । কেননা এটি আপনার দেহে দ্রুতই শক্তি যোগাবে এবং আপনার হজমকেও ত্বরান্বিত করবে । আপনি ডাবের পানি খেতে পারেন, এটি আপনার দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে । আপনি লেবুর সরবত খেতে পারেন, কমলার রস এবং অন্যান্য তাজা ফল বা ফলের সরবত খেতে পারেন । এগুলো আপনাকে চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি ভিটামিনও সরবরাহ করবে । এ ছাড়াও আপনি চিয়া সিড ভিজিয়েও খেতে পারেন,এটিও আপনাকে হাইড্রেটেট রাখতে সাহায্য করবে ।

২ । আপনি খেজুর খেতে পারেনঃ 

খেজুর শক্তির চমৎকার একটি উৎস । এটি রোজাদারদের জন্য একটি আদর্শ খাবার । খেজুর আমাদের দেহে দ্রুতই গ্লুকোজ জোগান দিতে পারে ফলে আমাদের দেহ নিমিষেই শক্তি ফিরে পায় । এতে প্রচুর ফাইবার থাকায় এটি আমাদের হজমেও দারুন সাহায্য করে । 

৩ । তাজা ফল খেতে পারেনঃ

ইফতারে আপনি তরমুজ, বাঙ্গি, আপেল, কলা, পেপে, আনারস কিংবা পেয়ারা ইত্যাদি খেতে পারেন । এগুলো ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি আপনাকে ভিটামনও সরবরাহ করবে । এ ছাড়াও কলা এবং আপেল ন্যাচারাল চিনি এবং ফাইবার প্রদান করে থাকে । ফলে আমাদের দেহ দীর্ঘ সময় শক্তি ধরে রাখতে পারে । 

৪ । প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খতে হবেঃ 

প্রোটিন আমাদের দেহের পেশি সুস্থ সবল রাখে এবং লম্বা সময় শক্তি সরবরাহ করে থাকে । তাই ইফতারে আপনি সেদ্ধ ডিম, গ্রিলড মুরগি কিংবা দই-ছানাও রাখতে পারেন । 

৫ । শর্করা এবং আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবেঃ 

এ জন্যে ছোলা হতে পারে একটি উত্তম খাবার । তাই নিয়মিত ইফতারে ছোলা রাখতে পারেন । ছোলাতে প্রকৃতিগত ভাবে প্রোটিন, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আয়রন বিদ্যমান । তবে এটি আপনাকে খেতে হবে অতিরিক্ত মসলা বা ঝাল ছাড়াই সাদামাঠা ভাবে । এ ছাড়াও আপনি খেতে পারেন ওটস । এটিও আপনাকে লম্বা সময় শক্তির যোগান দিতে পারে । 

৬ । বাদাম বা বীজ জাতীয় খাবার খেতে পারেনঃ 

এই তালিকায় আছে কাঠ বাদাম, কাজু বাদাম সূর্যমুখী এবং তিসির বীজ । এগুলোতে আছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন এবং ফাইবার । যেটা আমাদের দীর্ঘ সময় এনার্জি ধরে রাখতে সাহায্য করে । যেমন চিয়া সিড আমাদের দেহকে হাইড্রেটেট রাখে এবং প্রোয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে । 

৭ । খেতে পারেন দই জাতীয় খাবারঃ 

ইফতারে দই আমাদের হজমের জন্য বেশ উপকারী একটি খাবার । কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে, যেটা আমদের পেট ঠান্ডা এবং সুস্থ্ রাখে । দইয়ের সরবত আমাদের দেহকে শীতল রাখে এবং ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে । দই খেলে আমাদের দেহ সতেজ থাকে এবং পেট ভাল থাকে ।

যে খাবার গুলো ইফতারে আমরা খাবনা 

আমাদের ভেতর অনেকেই ইফতারের সময় পানি খেয়েই ভাজাভুজি খাওয়া শুরু করে দেই । যেমন ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনি, চপ ইত্যাদি বেশ মজা করে খাই । দিনভর রোজা রাখার পর এসব খাবার খেলে অনেকের বুকজ্বালা, পেটব্যথা, বুক ধড়ফড় করতে পারে । আবার অনেকের রক্তে ক্ষতিকর চর্বিও বাড়তে পারে । বাড়তে পারে সেই সাথে ওজন। এর কারণ, এসব তৈলাক্ত, চর্বিযুক্ত খাবারে থাকে প্রচুর ক্যালরি ।

 এই ছিল আজকের মতো । আলাপ আপনাদের কেমন লাগলো কমেন্টে জানাবেন । সিয়াম সাধনা আপনাদে জন্য সহজ হয়ে যাক । এই কামনায় আল্লাহ হাফেজ ।  





No comments

Powered by Blogger.