ব্যাথা কমাবে যে ৬ পানীয়
যদি আপনার প্রায়ই দেহের হাড়ের জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধিগুলোতে তীব্র ব্যথা হয়? তবে বিজ্ঞান বলে, এটি শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ । নির্দিষ্ট কিছু খাবার দাবার আছে যেগুলো খেলে ইউরিক এসিড আমাদের দেহে বেড়ে যায় । যেমন মাছ, মাংস, চিনি, কোমল পানীয় ইত্যাদি। এই খাবার গুলি সংশ্লেষণের ফলে আমাদের দেহে ইউরিক অ্যাসিড তৈরী হয়। আর শরীরে যখন ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন তা অস্থিসন্ধিগুলোতে গিয়ে বাসা বাঁধে। আর যখন এমনটি ঘটে তখনই শুরু হয় তীব্র ব্যথা। আমাদের দেহে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের স্বাভাবিক মাত্রা হচ্ছে প্রতি ডেসিলিটারে ৩ দশমিক ৫ থেকে ৭ দশমিক ২ মিলিগ্রাম। যখন এর বেশি হবে অবশ্যই সেটা আমাদের কমানোর চেষ্টা করতে হবে। তবে স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, প্রকৃতিতে এমন কিছু অতিপরিচিত উপাদান বিদ্যমান, যা ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে । দর্শক আজকের ভিডিওতে আমি আপনাদের সাথে এমন ৬টি পানীয় শেয়ার করতে চলেছি, যেগুলো আমাদের দেহে ইউরিক এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে আপনাদের বাত-ব্যথা তথা হাড়ের জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ব্যথা কমাতে সাহায্য করে । দর্শক যদি আপনার মতো আপনার পরিচিত কোন আত্মীয়সজন বা বন্ধু-বান্ধবের এমন ব্যথার সমস্যা থেকে থাকে তাহলে লেখাটা অবশ্যই তাদের সাথে শেয়ার করে দিন । তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আমরা পানীয় গুলো সম্পর্কে এবং এগুলোর প্রস্তুতপ্রণালি সম্পর্কে জানবার চেষ্টা করি ।
১. লেবু-পানি
দর্শক লেবুতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা ইউরিক অ্যাসিড ভেঙে ফেলে এবং য়ামাদের দেহ থেকে বাড়তি ইউরিক অ্যাসিড বের করে দেয়। এই পানীয় আপনি তৈরী করবেন অর্ধেকটা লেবুর রস নিয়ে এক গ্লাস গরম পানিতে ছেড়ে দিবেন । তারপর এভাবে তৈরি করা লেবু-পানি আপনি প্রতিদিন সকালে খাওয়া শুরু করে দিন ।
২. হলুদ মিশ্রিত দুধ
হলুদে আছে কারকিউমিন নামক একটি চমতকার উপাদান । এটি প্রদাহ দূর করতে এবং ইউরিক অ্যাসিড কমাতে অত্যন্ত ফলাদায়ক । এটি তৈরীর জন্য একগ্লাস গরম দুধ নিন, তারপর এতে এক চিমটি হলুদ মেশান । ব্যস এবার এই পানীয় আপনি ঘুমানোর আগে খেয়ে ফেলুন। এতে আপনার শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমে ব্যথা চলে যাবে ।
৩. শসার জুস
গরমে স্বস্তিদায়ক একটি খাবার হচ্ছে শসা। এর প্রায় ৯০ শতাংশই পানি। এ কারণে শসা আমাদের দেহ থেকে ইউরিক অ্যাসিডসহ অন্যান্য টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বের করে দিতে বেশ কার্যকর। শসায় থাকে না বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী উপাদান পিউরিন । শসার রেসিপি তৈরীর জন্য একটা আস্ত শসা নিন, এরপর সামান্য পানির সঙ্গে ব্লেন্ড করে জুস তৈরি করে নিন । জুস তৈরী হয়ে গেলে গরমের দিনে এই জুস খেয়ে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমিয়ে ব্যথা থেকে দূরে থাকুন ।
৪. তরমুজের জুস
তরমুজ শুধুমাত্র চমতকার একটি ফলই না, এটি উচ্চমাত্রার ইউরিক অ্যাসিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ‘গোপন অস্ত্র’ । শসার মতো তরমুজেরও প্রধান উপাদান পানি। তাই তরমুজ খেলে কিডনির কার্যকারিতা যেমন বাড়ে তেমনি অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তরমুজেও ক্ষতিকর পিউরিনের পরিমাণ খুবই কম থাকে । এই তরমুজ আপনি কিভাবে খাবেন? তরমুজের জুস বানিয়ে খেয়ে নিন । এতে আপনার শরীরে পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে, ইউরিক অ্যাসিড থাকবে নিয়ন্ত্রণে ব্যথাও চলে যাবে ।
৫. আদা–চা
আদায় আছে প্রচুর পরিমাণে প্রদাহরোধী উপাদান, যা ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে । কয়েক টুকরা টাটকা আদা নিন এবার পানিতে সেদ্ধ করুন। তারপর ওই পানিতে সামান্য মধু মিশিয়ে চা তৈরি করে খেতে থাকুন । এতে আপনার অস্থিসন্ধির ব্যথা দূর হয়ে যাবে ।
৬. গ্রিন টি
পুষ্টিবিদরা গ্রিনটিকে ছোট্ট এক কাপ ওষুধও বলে থাকেন । গ্রিন টি শুধু শরীর ও মনকে চাঙ্গাই করে না, এতে আপনি পাবেন প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। এ কারণেই গ্রিন টি শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড বের করে দেয় । ফলে আমাদের অস্থিসন্ধির ব্যথা দূর হয়ে যায় । শুধু তাই নয় প্রতিদিন গ্রিন টি খেলে কিডনির কার্যকারিতা বেড়ে যায় ।
কেমন লাগলো কমেন্টে জানাবেন । তো আজ এ পর্যন্তই । কথা হবে পরের কোন এপিসোডে । আল্লাহ হাফেজ ।
Post a Comment