কিডনি ভালো রাখতে চান, সকালের এই ৫ অভ্যাস রপ্ত করুন

আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গুলোর মধ্যে কিডনি একটি। আমাদের এই কিডনি যদি সুস্থ না থাকে, তাহলে আমাদের পোয়াতে হয় নানান রকমের দূর্ভোগ । আমাদের মৃত্যুও হতে পারে । শুধু কিডনি কেন, যে কোন অসুস্থতাই আমাদের জীবন বিপন্ন করে দিতে পারে । যেহেতু আজকে কিডনি নিয়ে আলাপ করতে চলেছি তাই অন্য প্রসঙ্গ আজকে থাক । নানান রকম কারণেই আমাদের এই কিডনি জামেলা করতে পারে । তো আজকে আমরা কিডনি কিভাবে সুস্থ রাখতে পারি, সেটার উপর ফোকাস করবো । বিশেষ করে আমাদের সকালের কিছু অভ্যাস নিয়েই আলোকপাত করবো । সহজ কথায় আমাদের সকালের কয়েকটি অভ্যাসই উপহার দিতে পারে একটি সুন্দর সুস্থ কিডনি । আজকের ভিডিওতে আমি আপনাদের সাথে সেগুলোই শেয়ার করতে চলেছি । তো চলুন শুরু করা যাক ।

একটা বিষয় হয়তো আমরা কম বেশি সবাই জানি, কিডনি ভালো রাখতে ঠিকঠাকভাবে পানি পান করা প্রয়োজন। তবে এটার অর্থ এই না যে আপনি দিনভর গ্লাসের পর গ্লাস পানি পান করতেই থাকবেন । কিংবা সকালে উঠেই আপনাকে ভরপেট পানি পান করতেই হবে । বরং খুবই সাধারণ এবং সহজ কিছু অভ্যাস আপনার কিডনির কার্যকারিতা ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। এমন কিছু অভ্যাসের কথাই এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করছি ।

১ । সকালেই এক গ্লাস পানি পান করুন

সকালটা আপনি অনায়াসে শুরু করতে পারেন এক গ্লাস পানি দিয়ে। এতে আপনার সারা দিনের পানির একটা  অংশ সকালবেলাতেই পূরণ হয়ে যাবে । তার অর্থ এই নয় যে, ধরাবাঁধা নিয়মে পরিপূর্ণ এক গ্লাস পানিই আপনাকে খেতে হবে । আপনি একটু আধটু কম খেলেও খেতে পারেন । আসল বিষয়টা হচ্ছে, সকালেই আপনি এমন একটা কাজ করুন, যাতে আপনার দেহে পানির ঘাটতি্টা না হয়। আর পানির এই ঘাটতি হচ্ছে নাকি ঠিকঠাক আছে, সেটা আপনি বুঝতে পারবেন, যখন আপনি প্রস্রাব করবেন । যদি দেখেন আপনার হালকা হলদে রঙের প্রস্রাব হচ্ছে তাহলে বুঝবেন,  আপনার পানির চাহিদা পূরণ হচ্ছে ঠিক মতই। আর গাঢ় প্রস্রাব বা প্রস্রাবের পরিমাণ কম হলে বুঝবেন ঘাবলা হচ্ছে । তার মানে আপনার পানি পান ঠিকমত হচ্ছে না ।


২ । স্বাস্থ্যকর নাশতার অভ্যাস করুন

আপনার সকালের নাশতা হোক স্বাস্থ্যকর । আপনি এমন সব খাবার খাবেন, যাতে লম্বা সময় আপনার ক্ষুধা না পায়। এতে আপনার ওজন ও রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ  আপনার জন্য সহজ হবে । অবশ্যই প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া ছেড়ে দিন । গোটা বা আস্ত শস্যের অর্থাৎ রিফাইনড বা পরিশোধিত নয় এমন  খাবার বেছে নিন । যেমন আপনি খেতে পারেন লাল আটার রুটি। আঁশসমৃদ্ধ অন্যান্য খাবারও খেতে পারেন । মিষ্টি জাতীয় খাবার এবং মিষ্টি পানীয় যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। সেই সাথে বাড়তি লবণ খাওয়াও ছেড়ে দিন ।

৩ । নিয়মিত শরীরচর্চা করুন

সকালে উঠেই আপনি শরীরচর্চা করতে পারেন। এতে আপনার সারা দিনের জরুরি একটা কাজ করা হয়ে যাবে। এই শরীরচর্চার অভ্যাস আপনার ওজন, রক্তচাপ ও রক্তে চিনি বা গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। আর এতে আপনার কিডনিও সুস্থ সবল থাকবে।

৪ । মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন

মানসিক চাপে আমাদের দেহ নানাভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, মানসিক চাপ আজকাল আমাদের নিত্যসঙ্গী । তাই এই মানসিক চাপ সামলাতে আপনাকে সকালেই প্রস্তুত করে গড়ে তুলতে হবে। আপনি সকালের স্নিগ্ধ পরিবেশে যোগব্যায়াম  এবং সে সাথে মেডিটেশন চর্চা করতে পারেন। এতে আপনার মানসিক চাপ সামলানোর অভ্যাস গড়ে উঠতে পারে । প্রকৃতির সাথে মিশে যান, এতে আপনি শান্তি পেতে পারেন। প্রশান্তিদায়ক শব্দের মাঝে খানিকটা সময় আপনি কাটিয়ে দিতে পারেন। এমনকি ডিজিটালমাধ্যমেও এমন শব্দের ইফেক্ট সৃষ্টি করে আপনি সেটা উপভোগ করতে পারেন। এই যেমন, বৃষ্টির শব্দ বা পাখির ডাক যেটা আপনার মনকে প্রশান্তি এনে দেয় । 


৫ । সকালে জেগে ওঠের অভ্যাস করুন 

সকাল সকাল ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন । মনে রাখেন Early to bed & early to rise makes a man healthy, wealthy & wise . এই অভ্যাস গড়ে তুললে আপনার স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখা অনেক সহজ হয়ে যাবে । আরেকটে কথা, কাজের চাপ আছে বলে কখনই আপনার প্রস্রাব চেপে রাখবেন না, এমনটা যেন কখনই না হয় । পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে কোনো সময়ই আপস করবেন না । যদি আপনি একটু বেশি সকালে উঠতে পারেন, তাহলে আপনার অফিস বা কাজের জায়গায় পৌঁছানোর জন্য কিছু পথ আপনি হেঁটেও যেতে পারেন । যার ফলে এমন অভ্যাসে আপনার পক্ষে সুস্থ থাকা অনেক সহজ হয়ে যাবে ।

আজ থেকেই এই অভ্যাস গুলো রপ্ত করার চেষ্টা করতে পারেন । তো আজ এ পর্যন্তই । কথা হবে পরের কোন এপিসোডে । আল্লাহ হাফেজ ।



No comments

Powered by Blogger.