যে সব খাবার আয়রনের ঘাটতি মেটায়
জীবন মানেই অক্সিজেন । অক্সিজেন ছাড়া কখনোই জীবন হতে পারে না । ঠিক তেমনই রক্ত মানেই আয়রন । আয়রনকে রক্তের ফুয়েল বা জ্বালানীও বলতে পারি । রক্তে যখন আয়রন কমে যায়, তখন আমরা একে রক্ত শূন্যতা বা এনিমিয়া বলে থাকি । সুতরাং আয়রন কমে যাওয়া মানেই আমাদের জীবন নামক আলোটাও কমে যাওয়া । অর্থাৎ রক্তে আয়রন আমাদের জীবনের জন্য অপরিহার্য একটি অংশ । তাই এমন সব খাবার আমাদের খেতে হবে, যাতে আমাদের দেহ পর্যাপ্ত আয়রন পেতে পারে ।
রক্ত ছাড়া আমাদের জীবন অচল, আবার আয়রন ছাড়া রক্ত ভারসাম্যহীন । সুতরাং আয়রন সমৃদ্ধ খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য । তো আজকে আমরা এমন সব খাবার নিয়েই আলাপ করবো যেগুলো খেলে আপনি অনায়াসে সেই খাবার থেকে আয়রন পেতে পারেন ।
১ । কলাঃ
কলা হচ্ছে ভিটামিন এ, বি এবং সির গুরুত্বপূর্ণ উৎসও । এ ছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর আঁশ, লৌহ ও অন্যান্য খনিজ উপাদান । তাই আয়রন পেতে আপনি খেতে পারেন কলা । কলা আপনি পাকা বা কাঁচা—দুই অবস্থায়ই খেতে পারেন । তবে এ ক্ষত্রে দুই ধরনের কলায় পুষ্টিমানের ভিন্নতা বিদ্যমান ।
২ । ডালিমঃ
ডালিমে প্রচুর খনিজ বিদ্যমান । তাই যারা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তারা এই ডালিম বেশি বেশি করে খেতে পারেন । ডালিমে প্রচুর খনিজ ছাড়াও আছে অ্যামিনো অ্যাসিড, ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ ভিটামিন এ, সি, ই। যা আমাদের দেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ।
৩ । খেজুরঃ
আয়রনের জন্য চমৎকার একটি খাবার হচ্ছে খেজুর । খেজুরে থাকে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। তাই আয়রনের জন্য আপনি খেজুর খেতে অয়ারেন ।
৪ । পালং শাকঃ
পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে, এ, সি, বি২ ও ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায় । এ ছাড়াও ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রনেরও গুরুত্বপূর্ণ উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম পালংশাক যদি আপনি খান তাহলে আপনি, ২৩ গ্রাম ক্যালরি, ৩ গ্রাম আমিষ, ৪ গ্রাম শর্করা ও ২ গ্রাম আঁশ পাবেন । তবে এতে কোনো চর্বির অস্তিত্ব নাই।
৫ । কচুঃ
কচু শাক আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার পাশাপাশি মানুষের শরীরে প্রয়োজনীয় আয়রনের জোগান দিতে পারে । কচুশাকে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, বি এবং সি; ক্যালসিয়াম, আয়রন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান । কচুশাক আমাদের নানা রোগ সারাতে সহজলভ্য এবং কার্যকরী একটি খাবার ।
৬ । মুরগীর মাংসঃ
মুরগির মাংস হচ্ছে প্রথম শ্রেণির প্রোটিনের চমৎকার একটি উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম চামড়া ছাড়া মুরগির বুকের মাংসে ২২ দশমিক ৩ গ্রামের মতো প্রোটিন পাওয়া যায়। প্রথম সাড়ির আমিষ হওয়ার কারণে এই মুরগীর মাংসে সব কটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো অ্যাসিডই পাওয়া যায়। এ জন্যে এটি আয়রনের চমৎকার একটি সোর্স ।
৭ । কলিজাঃ
কলিজা আমাদের দেহে রক্তে আয়রনের মাত্রা বাড়ায় । গরু, ছাগল, মুরগি এই তিন ধরনের প্রাণীর কলিজাতেই পর্যাপ্ত আয়রন পাওয়া যায় । তবে একটু কিন্তু আছে, যাঁরা অ্যালার্জি বা চুলকানির সমস্যায় আছেন, তাঁরা গরুর কলিজার পরিবর্তে মুরগি বা খাসির কলিজা খেতে পারেন ।
৮ । আপেলঃ
আপেল আয়রনের চমৎকার একটি উৎস । জানা যায় প্রতিদিন একটি আপেল খেলে অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা কমপক্ষে ৩৫ শতাংশ কমিয়ে আনা যায় । এ ছাড়াও আপেল শরীরের কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও দারুন ভাবে সাহায্য করে ।
সুতরাং আপনার দেহে আয়রনের অভাব মেটাতে বা আয়রনের আধিক্য পেতে চাইলে এতক্ষণ যে খাবার গুলোর কথা আলাপ করলাম, সেগুলো নিয়মিত খাওয়া চালিয়ে যান ।
তো আজ এ পর্যন্তই । কথা হবে পরের কোনো এপিসোডে । আশা করছি আজকের ভিডিওটি আপনাদের ভালো লেগেছে । যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে একটা লাইক দিয়ে শেয়ার করে সবাইকে শোনার সুযোগ করে দিবেন । আল্লাহ সকল অবস্থায় আমাদের সহায় হোক-আমিন ।
Post a Comment