যে নিয়মে দুধ পান করলে দূর হবে ঘুমের সমস্যা
আমরা অনেকেই ঘুমের সমস্যায় ভুগে থাকি । কেউ আবার এতে ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে ঘুমের ওষুধও কিনে খাই । ফলে আমরা আমাদের অর্থনৈতিক এবং শারীরিক দু দিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্থ হই । টাকা পয়সাও হারাই স্বাস্থ্যেরও বারোটা বাজিয়ে ছাড়ি । কিন্তু এই নাজুক পরিস্থিতি থেকে আপনি আপনার স্বাভাবিক খাবার দিয়েই বেড়িয়ে আসতে পারেন । ভাবছেন কিভাবে সম্ভব ?
বর্তমান বিশ্বের ১০ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষের মধ্যেই ঘুমের ব্যাধি—অনিদ্রা—ইনসমনিয়া দেখা যায়, ক্ষেত্রে বিশেষে এই সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত দেখা যায়।কিন্তু এই নাজুক পরিস্থিতি থেকে আপনি আপনার স্বাভাবিক খাবার দিয়েই বেড়িয়ে আসতে পারেন । আজকের লেখাতে আমরা সেটাই আলাপ করতে চলছি । তো চলুন শুরু করা যাকঃ
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার সাধারণত মানুষের ঘুমের গুণগত মানকে উন্নত করতে পারে এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব রাখে । আমরা যদি ঘুমানোর আগে হালকা উষ্ণ দুধ পান করি তাহলে এই দুধ পানের সম্ভাব্য বেশ কিছু পজিটিভ দিক পেতে পারি । এই ইতিবাচক দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুনিদ্রা । তো এই দুধপান কিভাবে আমাদের সুনিদ্রা নিয়ে আসে চলুন সেটা নিয়ে আলাপ করিঃ
১ । আমরা যদি দুধ পান করি তাহলে, এই দুধে থাকা ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার সেরোটনিনের সূত্রপাত ঘটে। যেটা আমাদের মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায় । ফলে আমাদের স্নায়ুবিক উত্তেজনা কমে যায় । আর এ কারণেই দুধ খেলে আমাদের ঘুম চলে আসে । এ ছাড়াও মেলাটোনিন নামক হরমোন থাকে এই দুধে, যেটা আমাদের ঘুমের কোয়ালিটি বাড়াতে সাহায্য করে ।
২ । আমরা যদি ঈষদোষ্ণ দুধাপন করি তাহলে এর উষ্ণ তাপমাত্রা শরীর ও মনকে শিথিল করতে সাহায্য করবে , ফলে আমরা প্রশান্তি অনুভব করবো এবং আমাদের উদ্বেগ কমে যাবে । ফলে আমাদের সুনিদ্রা হবে ।
৩ । দুধে কিছু পরিমাণ মেলাটোনিন হরমোন থাকে, যেটা আমাদের ঘুম-জাগরণের চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ঘুমের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে ।
৪ । দুধ হচ্ছে ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস, যেটা আমাদের পেশির নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং পেশির ক্র্যাম্প কমাতে ভুমিকা রাখে ফলে আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি না।
৫ । দুধ ম্যাগনেশিয়ামের একটি চমৎকার উৎস। আর এই ম্যাগনেশিয়াম হচ্ছে একটি খনিজ, যেটা শিথিলতা বাড়াতে এবং ঘুমের গুণগত মান উন্নত করতে ভূমিকা রাখে ।
৬ । দুধে আছে কেসিন ট্রিপটিক হাইড্রোলাইজ নামক পেপটাইড, যেটা আমাদের মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে এবং আর মানসিক চাপ মুক্ত হওয়া মানেই আপনার সুনিদ্রা ।
তবে ঘুমানোর আগে হালকা গরম দুধ পান করার সময় আপনাকে কিছু স্পেশাল জিনিষ মনে রাখতে হবেঃ সেগুলো হচ্ছেঃ
১। শুরুতে আপনি অল্প পরিমাণ দুধপান করুন এবং লক্ষ্য করুন এটি আপনার ক্ষেত্রে কি রকম কাজ করছে । যদি আপনি দ্যাখেন এটি আপনাকে ভালো ঘুমাতে সাহায্য করছে, তাহলে আপনি আস্তে আস্তে দুধ পান করার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন । (একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের প্রতিদিন ন্যূনতম ২৫০ মিলিলিটার দুধ পান প্রযোজ্য )
২ । কিছু লোকের গরম দুধ পান ভাল ফল দেয়, আবার অন্যরা ঠান্ডায় ভালো রেজাল্ট পান । সুতরাং আপনি কোন তাপমাত্রায় ফল পাচ্ছেন, সে অনুযায়ী আপনি দুধ পান করুন।
৩ । দুধ পান করার পর সাথে সাথেই বিছানায় যাবেন না । সাধারণত ঘুমানোর আধা ঘন্টা আগে গরম দুধ পান করে নেয়াই উত্তম । ফলে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনার শরীর ও মন শিথিল হবার জন্য যথেষ্ট সময় পাবে ।
৪ । দুধে চিনি বা মধু না মেশানোই উত্তম । কারণ, এর ফলে চিনিতে থাকা অতিরিক্ত শর্করা শরীরের ব্লাড সুগার বাড়িয়ে দিতে পারে।
সুতরাং নিয়মিত রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ পান করুন এতে আপনার দেহের পুষ্টি চাহিদও মিটবে বোনাস হিসাবে আপনার ঘুমটাও চমৎকার হবে ।
আশা করছি আজকের লেখাটি আপনাদের ভালো লেগেছে । যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে একটা লাইক দিয়ে শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিবেন ।
Post a Comment