ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখা যাবে কি ?

ডায়াবেটিস বর্তমান সময়ে সর্বাধিক আলোচিত রোগের একটি । মনুষ্য সভ্যতা এগিয়ে চলছে, বিজ্ঞানও দিন দিন উন্নতি করছে, অথচ এই ডায়াবেটিস সমস্যা যেন উল্টো পথে হাটছে । সহজ কোনো সমাধানতো পাওয়া যাচ্ছেই না । বরং ক্রমেই বেড়ে চলছে এই সমস্যা । তাই একটু আয়েশ করে খাবারও জো নেই । খেতে বসলেই বারবার ভাবতে হয় খাওয়া যাবে তো ? এই যেমন ধরুন খেজুরের কথা । মনে চাইলো আজকে একটু মজা করে খেজুর খাবো ? কিন্তু ঐ যে বললাম বারবার ভাবতে হয় । 

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখা যাবে কি ? আজকে আমি আপনাদের সাথে এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলাপ করবার চেষ্টা করবো । এক কথায় ডায়াবেটিস রোগীরা কি খেজুর খেতে পারবেন, নাকি পারবেন না, পারলে কয়টি খাবেন, কেমন করে খাবেন । এই সব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই আজকের লেখাতে আলাপ করতে চলেছি । যারা এই পর্যন্ত আমাদের সাথে ছিলেন আশা করি তারা শেষ পর্যন্ত সাথেই থাকবেন । তো চলুন শুরু করা যাক ।

খেজুর অত্যন্ত চমৎকার পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল । খেজুর ছাড়া ইফতার আজকাল ভাবাই যায় না । কিন্তু ডায়াবেটিস প্যাসেন্টদের জন্য খেজুর কি বিরূপ প্রভাব ফেলে ? খেজুর ব্লাড সুগারে কি বিপদজনক ? আসুন আমরা জানতে চেষ্টা করি ডায়াবেটিস প্যাসেন্টরা কি খেজুর তাদের খাবার তালিকায় রাখতে পারবেন নাকি পারবেন না ।

খেজুরে সাধারণত দুটি উপাদান থাকে । যে গুলোর একটি উপাদান ব্লাড সুগার কমানোয় বাধা দেয় । আর একটি উপাদান হচ্ছে ডায়াবেটিস কমানোর উপায় । সাধারণত একটি খেজুরের ওজন যদি ২৪ গ্রাম হয়, তাহলে সে খেজুরে ১৮ গ্রাম থাকে কার্বোহাইড্রেট । এর অর্থ দাড়ায় খেজুর খেলে আপনার ব্লাড সুগার সহজেই বাড়ার কথা । পক্ষান্তরে খেজুরে ২ গ্রাম ফাইবারও থাকে । এই ফাবার আপনার কার্বোহাইড্রেটের শোষনের হার কমিয়ে দেয় । যার দরুন আপনার ব্লাড সুগার কন্ট্রোলে থেকে যায় । এতে কি আপনার ডায়াবেটিস বাড়বে নাকি কমবে ? 

আসুন আরোও একটু পরিষ্কার ভাবে জেনে নেয়া যাক । খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স(GI) এবং গ্লাইসোমিক(GL) লোড জানলে আমরা আরোও ভালো ভাবে জানতে পারবো । যে খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এবং গ্লাইসেমিক লোড যত কম সেই খাবার ততই ডায়াবেটিস বান্ধব । খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৪৪ থেকে ৫৫ । অর্থাৎ খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম । তাই ব্লাড সুগারোও বাড়বে কম । সুতরাং আপনি ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় নিঃসন্দেহে রাখতে পারেন খেজুর । এখন জানা হয়ে গেল যে খেজুর খাবার তালিকায় রাখা যাবে । কিন্ত কি পরিমাণ রাখা যাবে বা কয়টি খাওয়া যাবে ।

৪৮ গ্রাম বা দুইটি খেজুরের গ্লাইসেমিক লোড ১৮ । অর্থাৎ দুটি খেজুরের গ্লাইসেমিক লোড হচ্ছে মাঝামাঝি পর্যায়ের । খুব বেশিও না আবার কমও না । সুতরাং আপনি ডায়াবেটিস প্যাসেন্ট হলে নিশ্চিন্তে দুটি খেজুর আপনার খাবার মেনুতে রাখতে পারেন । তবে দুটোর বেশি আপনার জন্য নিরাপদ নয় । 

খেজুর একটি চমৎকার স্বাস্থকর খাবার । এর সাথে আছে ধর্মীও নিবিঢ় সম্পর্ক । যেহেতু খেজুরের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এবং গ্লাইসেমিক লোড কম । তাই পরিমাণ মতো খেজুর আপনি ডায়াবেটিস প্যাসেন্টের খাবার তালিকায় রাখতেই পারেন । যদি আপনি ডায়াবেটিস প্যাসেন্ট হয়ে থাকেন । তাহলে এক সাথে দুটির বেশি খেজুর না খাওয়াই আপনার জন্য বেটার । আর যদি আপনি ডায়াবেটিস রোগী না হয়ে থাকেন । তাহলে বেশি আপনি খেতেই পারেন । নো প্রব্লেম ।

এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য মোবারকবাদ । আশা করি লেখাটা আপনাদের ভালো লেগেছে । যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে একটা লাইক দিবেন, আর বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করে পড়ার সুযোগ করে দিবেন । আল্লাহ সকল অবস্থায় আমাদের সহায় হোক - আমিন ।





No comments

Powered by Blogger.