খেজুর দিয়ে ইফতার করা কেন এতো উপকারী ?

আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ প্রায় সব সময়ই খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন । সেই থেকেই সারা বিশ্বে খেজুর দিয়ে ইফতার করার প্রচলন শুরু । যেহেতু আমাদের নবী এই খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন, তাই এর তাৎপর্য অনস্বীকার্য । খেজুর খেয়ে রোযার সমাপ্তি টানা কেন উপকারী সেটা নিয়েই আমার আজকের আলাপ । 

আমাদের প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাঃ খেজুর এবং পানি দিয়ে ইফতার করতেন । মিষ্টি, ফল, বিশেষ করে খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত । কোন কারণে যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে যে কোন হালাল খাবার দিয়ে, এমনকি শুধুমাত্র পানি দিয়েও ইফতার করা যায় । রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ রোজা রাখলে সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে, খেজুর না হলে পানি দিয়ে; নিশ্চয়ই পানি পবিত্র।’ (সূত্র: তিরমিজি ও আবু দাউদ)

চলুন যেনে নেয়া যাক, ধর্মীয় গুরত্ব ছাড়াও কেন খেজুর দিয়ে রোযার সমাপ্তি টানা উপাকারী ।

১ । বৈজ্ঞানিক তাৎপর্যঃ আগেই বলা হয়েছে, ইফতারের শুরুতে খেজুর খাওয়ার পেছনে ধর্মীয় তাৎপর্য অনস্বীকার্য । তবে খেজুরের বৈজ্ঞানিক তাৎপর্যও বিদ্যমান । কেননা খেজুর পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল । কোন সন্দেহ নাই খেজুরের কিছু বিশেষ পুষ্টিগুণ থাকার কারণে রোযার সমাপ্তি টানতে খেজুর একটি আদর্শ রেসিপি ।

২ । প্রাকৃতিক মিষ্টিঃ খেজুর প্রাকৃতিক মিষ্টিতে ভরপুর । এতে আছে প্রধানত গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ, যা দ্রুত রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে আমাদের শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি এনে দেয় । যার ফলে দিনভর রোযা রাখার পর খেজুর দিয়ে ইফতার করলে, আমাদের শরীর দ্রুতই প্রাণ সঞ্চার এবং ফুরফুরে হয়ে উঠে ।

৩ । পুষ্টিতে ভরপুরঃ খেজুরে আছে প্রচুর আঁশ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিনের মতো অতি প্রয়োজনীয় কিছু পুষ্টি উপাদান । যার কারণে খেজুরকে পুষ্টি উপাদানের পাওয়ার হাউস বলা হয়ে থাকে । যে গুলো আমাদের দেহের ক্ষয়পূরণে ব্যাপক ভুমিকা রাখে ।

৪ । হাইড্রেশনঃ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পানি । ফলে সারাদিন রোযা রাখার কারণে আমাদের শরীরে যে পানির ঘাটতি হয় । খেজুর সেটা সহজেই পূরণ করে দেয় । ফলে আমাদের শরীরে স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকে ।

৫ । সহজপাচ্যতাঃ খেজুরে যে চিনি বিদ্যমান সেটা সহজেই হজম যোগ্য । ফলে সারাদিন রোযা রাখার কারণে খালি পেটে খেজুর খেলে তা সহজেই হজম হয়ে যায় । পাকস্থলীতেও কোনো ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয় না। এ ছাড়াও খেজুরে যে আঁশ থাকে, তা পরিপাক ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়, কোষ্টকাঠিন্য বিদায় করে ।

৬ । কোষের সুরক্ষা ও প্রদাহরোধী বৈশিষ্ট্যঃ খেজুরে আছে প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বা প্রদাহরোধী উপাদান । ফলে এই খেজুর আমাদের কোষগুলোকে ক্ষতির কবল থেকে বাঁচায় এবং প্রদাহ প্রতিরোধ করে ।

৭ । দীর্ঘমেয়াদি শক্তির উৎসঃ খেজুরে অবস্থিত প্রাকৃতিক চিনি অত্যন্ত উপকারী । এটা আমাদের শরীরের রক্তের চিনির পরিমাণ হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটায় না । যার ফলে আমাদের শরীর দীর্ঘমেয়াদি প্রাণশক্তি পায়, যেটা পরবর্তিতে আমাদের কাজে দেয় ।

সুতরাং এখন থেকে নিয়মিতই খেজুর দিয়ে আপনার ইফতার শুরু করে দিন । তো আজ এ পর্যন্তই । কথা হবে পরের কোন এপিসোডে । আল্লাহ সকল অবস্থায় আমাদের সহায় হোক ।



No comments

Powered by Blogger.