কেন খাবেন সারা রাত ভেজানো কিশমিশ–পানি

কিশমিশ ভেজানো পানিকে পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন "সুপার ড্রিংক ।" কেন তারা কিশমিশ ভেজানো পানিকে "সুপার ড্রিংক" বলছেন সেটা নিয়েই আজকের আলাপ । আমরা অনেকেই শুকনো ফল হিসেবে কিশমিশ খেয়ে থাকি । আমাদের অনেকেই আবার পোলাও, পায়েস বা অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় খাবার তৈরীতেও কিশমিশ ব্যবহার করে থাকেন । পুষ্টিবিদরা বলছেন সকাল বেলা যদি আমরা কিশমিশ ভেজানো পানি খাই তাহলে সেটা আমাদের দেহে জাদুর মতো কাজ করে । কিশকিশ ভেজানো পানির ওজন কমানোতে যেমন আছে ব্যাপক ভুমিকা তেমনি আছে হজমশক্তি বৃদ্ধিতেও দারুন অবদান ।  

কিশমিশ–পানি কী

আপনারা হয়ত জানেন, রোদে শুকানো বা বাণিজ্যিকভাবে শুষ্ক করে নেওয়া আঙুরই হচ্ছে কিশমিশ। এতে পুষ্টি উপাদান ঘনীভূত থাকে তাই আপনি একে ‘পাওয়ার হাউস’ও বলতে পারেন। যখন আমরা এই কিশমিশ পানিতে কয়েক ঘণ্টা বা সারা রাত ভিজিয়ে রাখবো তখন তৈরি হয় কিশমিশ–পানি। এই পুষ্টিসমৃদ্ধ পানীয় সামগ্রিক সুস্থতার জন্য দারুন উপকারী।

কিশমিশ–পানি কেন স্বাস্থ্যকর

কিশমিশ ভেজানো পানি ওনেক প্রয়োজনীয় ভিটামিনে সমৃদ্ধ থাকে । এতে ভিটামিন সি ও এক ধরনের বিশেষ বি ভিটামিন (যেমন বি৬ ও নিয়াসিন) থাকে। এ ছাড়া কিশমিশে থাকে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ । কিশমিশে আছে শক্তিশালী অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট । যার মধ্যে রয়েছে ফেনোলিক যৌগ ও ফ্ল্যাভোনয়েড, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চমতকারভাবে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, কিশমিশে থাকা প্রাকৃতিক চিনি পানিকেো মিষ্টি করে তোলে।

কিশমিশ–পানির আরও ৮ উপকারিতা

১ । কিশমিশ–পানি প্রাকৃতিক শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট–সমৃদ্ধ, যা আমাদের দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি করে।

২ । হজমে সাহায্য করে কিশমিশ। মূলত কিশমিশ–পানিতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার বা আঁশ হজমে দারুন কার্যকরী । পানিতে ভিজিয়ে রাখলে কিশমিশের আঁশীয় উপাদান বেড়ে যায়, যা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে এবং পেট পরিষ্কার রাখে।

৩ । ত্বকের জন্য কিশমিশ ভেজানো পানি খুব উপকারী । কিশমিশ-পানিতে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ত্বকে বার্ধক্যের লক্ষণ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরীতে সাহায্য করে, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতার জন্য যা অপরিহার্য।

৪ । কিশমিশ ভেজানো পানি ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে। কিশমিশ–পানিতে প্রাকৃতিক ডিটক্সিফাইং বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা আমাদের লিভার ভালো রাখে।

৫ । কিশমিশের পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ রাখে । কিশমিশ-পানি আমাদের হৃৎ–স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও দারুন ভাবে কাজ করে ।

৬ । এই পানীয় হাড়ের জন্য খুব উপকারী। কিশমিশ ক্যালসিয়াম ও বোরনের ভালো উৎস, এ দুটোই শক্তিশালী হাড়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখতে পারে।

৭ । কিশমিশ–পানিতে থাকা ভিটামিন ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং এভাবে সংক্রমণ থেকে বাঁচায়।

৮ । কিশমিশের পানি আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। এটি চিনিযুক্ত পানীয়র স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে ভূমিকা রাখে, সামগ্রিক ক্যালরি গ্রহণ কমাতেও সাহায্য করে।

  • যেভাবে কিশমিশ–পানি তৈরি করবেন

    এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ কিশমিশ ভালোভাবে ধুয়ে এক গ্লাস পানিতে সারা রাত বা কমপক্ষে ছয় থেকে আট ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। সকালে কিশমিশ আলাদা করুন এবার পানিটুকু খালি পেটে বা আপনার সুবিধামতো সময়ে খেয়ে নিন । আপনি  অতিরিক্ত আঁশ ও পুষ্টির জন্য ভেজানো কিশমিশও খেতে পারেন। আরোও স্পেশাল কিছু চাইলে কিশমিশ-পানিতে চিয়া সিডও মেশাতে পারেন।


দর্শক কিশমিশ ভেজানো পানি যদি এতো এতো উপকার করে তাহলেতো একে সুপার ড্রিংক আমরা বলতেই পারি । 




No comments

Powered by Blogger.