১৪ দিন চিনি না খেলে যেসব আশ্চর্য উপকার আপনি পাবেন
চিনি সম্মানিত সুধি, আপনারা শিরোনাম দেখেই হয়তো বুঝতে পারছেন আজকে আমরা চিনি নিয়ে আলাপ করবো । খোলাসা করে বললে ১৪ দিন যদি আমরা চিনি না খাই তাহলে আমাদের দেহে কি ঘটবে ? মূলত আজকে এইটা নিয়েই বিস্তারিত আলাপ করতে চলেছি । যদি মনে হয় লেখাটা আপনার একটু হলেও কাজে আসবে, তাহলে বসে পড়ুন আর শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন । আর না হলে অযথা আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে স্কিপ করে চলে যান ।
তো চলুন শুরু করা যাক । আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চিনি ছাড়া চলা এটা আমরা ভাবতেই পারি না । আমাদের খাবার তালিকায় কোথাও না কোথাও চিনি থাকেই । কিন্তু পুষ্টিবিদরা বলে থাকেন, মদ ,সিগারেট কিংবা তামাক যেমন এক ধরনের আসক্তির উপকরণ । সেই রকমেই একটি উপকরণ এই আলোচিত চিনি । এর কারণ চিনি সরাসরি রক্তে মিশে যায় এবং অতি উচ্চ মাত্রার ফ্রুকটোজ তৈরী করে আমাদের ভেতর নেশা তৈরী করে । এ ছাড়াও অত্যধিক চিনি খেলে মানব দেহে ক্যানসারও সৃষ্টি হতে পারে । এসব কারণেই চিনিকে "হোয়াইট পয়জন" বা সাদা বিষ বলা হয়ে থাকে । একটা ব্যাপার আমরা প্রায় সবাই জানি, আমরা যেটাই খাইনা কেন তা শেষ পর্যন্ত চিনিতে পরিণত হয় । আর এ জন্যেই বেশি চিনি বা চিনি যুক্ত খাবার খেলে ক্লান্তি চলে আসে, আমাদের মাথা ঝিমঝিম করে, আমাদের চিন্তা শক্তি কমে যেতে থাকে এবং আমাদের দেহে চর্বি জমা হতে থাকে ।
আসুন এখন আমরা আসল আলাপে আসি । ১৪ দিন চিনি না খেলে আমাদের দেহে কি ঘটবে?
আপনি যদি ১৪ দিন চিনি না খান তাহলে আপনার হজমের প্রব্লেম, রাতে ঘুম না হওয়ার সমস্যা আর থাকবে না । এ গুলো ছাড়াও আরোও বেশ কিছু আশ্চর্য উপকারিতা আছে আপনার জন্য । তবে ১৪ দিন চিনি মুক্ত থাকার যে প্রভাব সেটা পেতে গেলে আপনাকে কয়েকটি ধাপে যেতে হবে । আসুন এই ধাপগুলো জেনে নেয়া যাকঃ
১-৩য়দিনঃ এই প্রথম তিনটি দিন হচ্ছে সবচেয়ে ঝামেলাপূর্ণ দিন । এর কারণ প্রথমত আপনাকে একটা অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসতে হবে । যেটা সচরাচর কঠিনই হয় । যা হোক আপনার দেহেকে প্রথমেই চিনি না খাওয়ার অভ্যাস রপ্ত করতে হবে । এতে আপনার শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া থাকবে যেমনটি থাকে অন্য নেশাকর দ্রব্যের । ফলে আপনার মাথা ব্যাথা, পেটব্যথা, ক্লান্তি দেখা দিতে পারে । তবে ঘাবরাবার কিছু নাই এটা স্বাভাবিক প্রিক্রিয়া । ফলে আপনার দেহে কি ঘটবে? আপনার শরীরে যে ক্ষতিকর উপাদান গুলো জমা ছিলো, সেগুলো নিষ্কাশনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে । তবে দেহের অন্য সব প্রক্রিয়া স্বাভাবিক ভাবেই চলতে থাকবে ।
৪-৭তম দিনঃ চতুর্থ দিন থেকে আপনার মনোযোগ ও শক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকবে । এ সময় আপনার মনোযোগ ও শক্তি ফিরে পেতে থাকবেন । আপনার নিজেকে শক্তিশালী মনে হবে । আপনার মনোযোগের দৃঢ়তা আগের থেকে মজবুত হবে ।
৮-১০ম দিনঃ এই পর্যায়ে আপনার শরীর চিনি মুক্ত হয়ে আপনার পরিপাকতন্ত্র দারুন ভাবে কাজ করা শুরু করবে । এটা ঘটতে থাকবে অষ্টম দিন থেকে । আপনার অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ভারসাম্য পূর্ণ হতে থাকবে । সেই সাথে আপনার পেট ফোলাভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং এর সাথে অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা গুলোও দূর হতে থাকবে ।
১১-১৪তম দিনঃ এই পর্যায়ে আপনার খিদে কমতে শুরু করবে । এর পর দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকে আপনার ঘুম ভালো হতে শুরু করবে । মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে আপনার কমে যাবে । যেহেতু চিনি দেহের ঘুমচক্রে ব্যাঘাত ঘটায় তাই এর পর থেকে আপনার অনিদ্রার অভ্যাস কেটে গিয়ে নিদ্রা ভালো হবে । এর বাইরে আরোও যা ঘটবে তা হচ্ছে আপনার ক্ষুধা কমে গিয়ে আপনার খাওয়ার ইচ্ছে কমিয়ে দিবে ফলে আপনার ওজন নেমে যাবে ।
এতক্ষণ ১৪ দিন চিনি না খেলে আপনি কোন পর্যায়ে কি উপকার পাবেন সেগুলো আলাপ করলাম । আসুন এখন দেখি এর দীর্ঘমেয়াদি কি কি উপকার আমরা পাবোঃ
প্রথমতঃ এর প্রভাবে আপনি যে সুবিধাটা আপবেন সেটা হচ্ছে আপনার হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে যাবে । সেই সাথে কমবে আপনার উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি । আপনার ব্লাড গ্লুকোজের মাত্রা থাকবে স্থিতিশীল । আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগের সমস্যা, কিডনি সমস্যা, চোখের সমস্যা এমন কি আপনার টাইপ-২ ডায়াবেটিসের প্রবণতাও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে । সুতরাং আপনি চিনি না খেলে এই জাতিয় সব সমস্যা থেকে আপনি রেহাই পেতে পারেন ।
এ ছাড়া আপনার ত্বকের স্বাস্থ্যও উন্নতির দিকে যাবে এই চিনি খাওয়া এড়িয়ে গেলে । কমে আসবে আপনার ব্রণ ও একজিমা । ক্রমান্বয়ে আপনি দেখবেন আপনার মেজাজ এবং স্মৃতিশক্তিও উন্নত হচ্ছে । আপনি পেতে শুরু করবেন কাজের মনোযোগ । চলে যেতে থাকবে আপনার বিষন্নতা । তবে আরোও একটি উল্লেখ যোগ্য উপকারীতা আপনি পাবেন । আচ্ছা বলুনতো এটা কি হতে পারে? এটা চমতকার একটি পুরষ্কার । সেটা হচ্ছে আপনার আগাম বুড়ো হওয়ার যদি কোনো প্রবণতা থেকে থাকে । তাহলে সেটাকে গলা টিপে মেরে ফেলবে ।
তাহলে ব্যাপারটা কি দাড়ালো চিনি খাওয়া আমাদের যতটা সম্ভব কমিয়ে দিতে হবে । তো এই ছিলো আজকের ভিডিও ।
আশা করছি আজকের লেখাটা আপনাদের ভালো লেগেছে । যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে একটা লাইক দিয়ে শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিবেন । আল্লাহ সকল অবস্থায় আমাদের সহায় হোক-আমিন ।
Post a Comment