পেঁয়াজপাতার ৯টি উপকারিতা

আমরা গ্রামাঞ্চলে পেঁয়াজপাতাকে অনেকে পেঁয়াজের ঢ্যাপ আবার অনেক অঞ্চলে কলি বলে থাকি । দর্শক আপনার কি বলেন কমেন্টে জানাবেন । শীতের সবজির মধ্যে পেঁয়াজপাতা অত্যন্ত জনপ্রিয়। এটি খেতেও অত্যন্ত মজাদার। অনেকে একে স্প্রিং অনিয়ন বা সবুজ পেঁয়াজও বলে থাকেন । পেঁয়াজপাতায় আছে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান, যেটে আমাদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে মজবুত করে, হাড়ের ঘনত্ব দৃঢ় করে এবং হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়াও পেঁয়াজপাতার আরও বেশ কিছু গুণাবলী রয়েছে।  আসুন সেগুলে জেনে নেই ঃ

১ । রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা মজবুত করে

পেঁয়াজপাতায় থাকে ভিটামিন সি ও কুয়ারসেটিন নামের ফ্ল্যাভোনয়েড । পেয়াজপাতা এগুলোর ভালো উৎস। এই দুটি উপাদান রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে মজবুত করে এবং অসুস্থতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

২ । ওজন কমাতে সাহায্য করে

পেঁয়াজপাতায় প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক আঁশ থাকে, যেটা খেলে পেট ভরা থাকে। পাশাপাশি আমাদের ক্ষু্ধাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। যারফলে অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আমাদের আকাঙ্ক্ষা কমে যায়, এতে আমাদের ওজন কমাতেও সহায়তা হয় । এর প্রাকৃতিক আঁশ বা ফাইবার আমাদের ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও কমাতে সাহায্য করে ।

৩ । ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে

পেঁয়াজপাতায় আছে বায়োফ্ল্যাভোনয়েডস নামে একটি উদ্ভিজ্জ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট । যেটি আমাদের অগ্ন্যাশয় ও অন্ত্রের ক্যানসার কমাতে ভুমিকা রাখে । এ ছাড়াও এর ভেতর থাকা ডায়েটারি ফাইবার কোলন ক্যানসারও প্রতিরোধ করতে পারে। গবেষণা থেকে জানা যায়, পেঁয়াজকলিতে যে অ্যালিসিন নামে যৌগ থাকে, সেটা ক্যানসারের কোষ গঠনে বাধা গ্রস্থ করে এবং টিউমারের বিস্তারের গতিকে কমিয়ে দেয় ।

৪ । সংক্রমণ প্রতিরোধ করে

যুগযুগ ধরে পেঁয়াজ ও রসুনের নির্যাস ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যেগুলো ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও ভাইরাসকে ধ্বংশ করতে পারে । এর ফলে সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়। পেঁয়াজের নির্দিষ্ট প্রজাতির ওপর ল্যাবে টেস্ট করে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত ঘনত্বে এটি সালমোনেলা বা ই. কোলাই বৃদ্ধিকে স্লথ বা কমাতে পারে বা মেরেও ফেলতে পারে।

৫ । হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষা দেয়

স্বাভাবিকভাবেই পেঁয়াজপাতায় থাকে প্রচুর পটাশিয়াম, যেটা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি আমাদের হৃৎপেশি উন্নত করে, খারাপ এলডিএল কমায় এবং ভালো এইচডিএলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে । এ ছাড়াও পেঁয়াজপাতা হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে দারুন ফলদায়ক ।

৬ । রোগের ঝুঁকি কমায়

পেঁয়াজপাতায় থাকে প্রচুর ফাইটোনিউট্রিয়েন্টে, যার মধ্যে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট । এগুলো কোষের ক্ষতির প্রবনতা কমায় । এর ভেতর আছে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং পলিফেনল যেটা ফ্রি র‍্যাডিকেলসকে ধ্বংস করে। যে ফ্রি র‍্যাডিকেলসের জন্য আমাদের ক্যানসার, হৃদ্‌রোগ এবং বার্ধক্যজনিত রোগ হতে পারে।

৭ । হাড়কে শক্তিশালী করে

পেঁয়াজকলি কোলাজেন সংশ্লেষণকে উদ্দীপিত করে, যা হাড়কে দৃঢ় ও মজবুত করে গড়ে তোলে। এ ছাড়াও এতে থাকা ভিটামিন কে হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতেও ভুমিকা রাখে । 

৮ । শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে

পেঁয়াজপাতায় থাকে সালফার যৌগ, যেটা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলো ইনসুলিনেরও কাজবাজ বাড়াতেও সাহায্য করে, যেটা আমাদের দেহের গ্লুকোজের শোষণ প্রক্রিয়াকে বাড়িয়ে দেয় । এতে আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায় ।

৯ । কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

পেঁয়াজপাতা হচ্ছে উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ যারফলে এটি হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করতে পারে । ফাইবারের অন্যতম একটি কাজ হচ্ছে অন্ত্রে খাবার সহজে চলাচলে সাহায্য করা, এর ফলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্যান্য হজমজনিত সমস্যা দূর করে দিতে পারে । এ ছাড়াও পেঁয়াজপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যার সমাধানেও ফলপ্রসূ ।  যেমন গ্যাস্ট্রিক, পেট ফাঁপা বা অম্বল ইত্যাদি ।








No comments

Powered by Blogger.